কক্সবাজারে আদালতপাড়া থেকে তুলে নিয়ে এক তরুণীকে দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) বিকেলে ওই তরুণী বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করেছেন। মামলায় চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা পাঁচজনসহ ৯ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আসামিরা হলেন- কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার পোকখালী ইউনিয়নের মধ্যম পোকখালীর রমজান আলী মেম্বারের ছেলে বর্তমানে ফকিরাবাজার এলাকায় বসবাসকারী ফিরোজ আহমদ (৪৭), লোদা মিয়ার দুই ছেলে রাসেল উদ্দিন (৩৮) ও নুরুল ইসলাম এবং ঈদগাঁও ইসলামপুর ইউনিয়নের ফকিরা বাজার এলাকার মৃত আব্দুল গণির ছেলে মো. শরীফ। তাদের সহযোগী হিসেবে আরও ৪-৫ জন এ ঘটনায় অংশ নেয়।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ঈদগাঁও ঢালার দুয়ার এলাকার ওই তরণীকে এজাহার আসামি ফিরোজ আহমদ ও মো. শরীফ উত্ত্যক্ত করে আসছিল। তারা তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ওই তরণীকে ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল নিয়মিত। সর্বশেষ গত সোমবার (১৪ মার্চ) দুপুর ২টার দিকে কক্সবাজার আদালতপাড়ার অ্যাডভোকেট একরামুল হুদার চেম্বার থেকে বের হলে আসামিরা ওই তরণীকে ঘিরে ফেলে। একপর্যায়ে ফিরোজ ও শরীফ তাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। বাধা দিলে অজ্ঞাত পরিচয়ে আরও কয়েকজন এসে তার হাত-পা ও মুখ চেপে ধরে একটি নোহা গাড়িতে তুলে নেয়। এরপর ফিরোজ গলায় থাকা ১২ আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন এবং সঙ্গে থাকা টাকা নিয়ে নেয়।
এ সময় পথচারীরা বাঁচাতে এগিয়ে এলে তারা গাড়ি নিয়ে কক্সবাজার ল্যাবরেটরি স্কুল সংলগ্ন (বাহারছড়া) ফিরোজের আত্মীয় জনৈক ফজল কাদেরের সেমিপাকা টিনশেড বাসায় নিয়ে একটি রুমে তাকে আটকে রাখে। তারপর ফিরোজ ও শরীফ তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যার হুমকি ও ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করে। একইভাবে নুরুল ইসলামও তাকে ধর্ষণ করে।
কিছুক্ষণ পর ২ নম্বর আসামি রাসেল উদ্দিন রুমে এসে নিজেকে পুলিশ অফিসার পরিচয় দিয়ে বিষয়টি কাউকে জানালে এবং বাড়াবাড়ি করলে মানবপাচার মামলায় চালান করে দিবে বলে হুমকি দেয়। একপর্যায়ে রাসেল উদ্দিনও তাকে ধর্ষণ করে। দলবদ্ধ ধর্ষণের ফলে ওই তরুণী জ্ঞান হারান। এরপর রাসেল ও শরীফ তাকে টেনে-হিঁচড়ে গেটের বাইরে এনে গেট বন্ধ করে দেয়। রাস্তায় থাকা এক ব্যক্তি তাৎক্ষণিক জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল দিলে আসামিরা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) সেলিম উদ্দিন জানান, গতকাল সোমবার বিকেলে শহরের শহীদ সরণি সড়কে ওই তরুণী এক ব্যক্তির সঙ্গে ঝগড়া ও মারামারি করছিলেন। এ সময় এক পথচারী ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানান। পুলিশ গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং ওই নারীকে থানায় অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন। পরে ওই তরুণী মঙ্গলবার দুপুরে থানায় ধর্ষণ মামলা করেন।
সুত্র : ঢাকা পোস্ট
701 total views, 2 views today
Leave a Reply